
প্রকাশিত: Sat, Apr 1, 2023 2:07 PM আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 11:20 AM
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং সংবাদের সত্য-মিথ্যা
রহমান বর্ণিল : কিছুদিন আগে সাগরের বুকে জেগে ওঠা একটা দ্বীপ, যেটা ইতোমধ্যে পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এরকম একটা জায়গায় আমরা দলবেঁধে বেড়াতে গিয়েছিলাম। এখানে এসে আমার অনুভূতি জানতে চেয়ে মুখের সামনে মাইক্রোফোন ধরলেন দেশের একটা মেইনস্ট্রিম টিভি চ্যানেলের একজন সাংবাদিক। কথা বলার একপর্যায়ে আমাকে তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘প্রকৃতির এই সৌন্দর্যের সঙ্গে এই যে দূর থেকে বাঁশির সুর ভেসে আসছে, সেটা শুনতে কেমন লাগছে’? আমি লক্ষ্য করলাম বাঁশির সুর দূর থেকে ভেসে আসছে না। সাংবাদিক সাহেব একহাতে আমার মুখে মাইক্রোফোন ধরে রেখেছেন, অন্য হাতে ইউটিউবে বাঁশির সুর চালিয়ে রেখেছেন। এখানে দেখুন, বাঁশির সুর ভেসে না আসলেও জায়গাটিতে সৌন্দর্যের কমতি ছিলো না। তারপরও সত্যের সঙ্গে একটা অযাচিত মিথ্যা জুড়ে দিয়েছেন সেই সাংবাদিক।
দেশে নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। দারিদ্রসীমার নীচে বাস করা ভাতপ্রধান বিরাট জনগোষ্ঠীর দেশে চালের দাম ৬০ টাকা! এরপর সাধারণ মানুষের কষ্টের আর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই। অক্ষরিক অর্থেই এটা নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সাধারণ মানুষ কী পরিমাণ কষ্টে আছে, সেটা উঁচুতলায় বসে অনুমান করাও কঠিন। এটা এখন সর্বজনবিধিত সত্য। প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শিশু সবুজের হাতে টাকা দিয়ে দিনমজুর বানিয়ে ছবি তুলে মিথ্যা স্টেটমেন্ট পত্রিকায় প্রচার না করলেও এটা সত্য। কিন্তু আমার সেই ফেইক বাঁশির সুরওয়ালা সাংবাদিকের মতো প্রথম আলোর সাংবাদিকটিও একটা সত্যের গায়ে অনাহুত মশলা মাখানোর জন্য শিশু বাচ্চাটির হাতে দশ টাকার নোট দিয়ে যে মিথ্যাটি প্রচার করলো, এতে সংবাদটিই কেবল বিঘ্নিত হয়নি, উপরন্তু প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সত্যটিও।
নিত্যপণ্যের দাম ক্রয়সীমার উপরে আছে। দেশের মানুষ কষ্টে আছে। এটা যেমন সত্য, অনুরূপ প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান মিথ্যাচার করে চরম অন্যায় করেছেন, এটাও সত্য। আপনি শামসুজ্জামানের মিথ্যাকে ‘মিথ্যা’ বললে দ্রব্যমূল্য যে আকাশছোঁয়া সেটা বিরুদ্ধে অবস্থান হয়ে যাবে না। আপনি যদি ন্যায়ের পক্ষের মানুষ হন, তাহলে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর পক্ষেও থাকবেন, আবার শামসুজ্জামানের মিথ্যার বিরুদ্ধেও থাকবেন। কারণ গণমাধ্যমকর্মীরা হচ্ছে দেশের চোখ। আর গণমাধ্যম হচ্ছে দেশের আয়না। মানুষ গণমাধ্যমকর্মীদের চোখ দিয়ে সেই আয়নায় দেশকে দেখবে। সাংবাদিকদের অবশ্যই দেশের মানুষকে নির্ভেজাল সত্যটি দেখানোর দায়বদ্ধতা আছে। সত্যের সঙ্গে একবিন্দু মিথ্যা মেশালেও সেটা জনগণের সঙ্গে হঠকারিতা। মুনাফাখোর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা যেমন রাষ্ট্রের শত্রু। অনুরূপ সত্যের সঙ্গে মিথ্যার মশলা মাখানো সাংবাদিকও কোনো সাধুসন্ন্যাসী নন। দুটোই অপরাধ, উভয়ই অপরাধী।
লেখক : কথাসাহিত্যিক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
